খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।যেভাবে খাবেন। 2024

Table of Contents

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা:

 

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিগুন সম্পন্ন একটি ফল ।খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা অপরিসীম I অনেক সময় খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয় । মানবদেহে শক্তির উৎস হিসেবে খেজুরের অবদান অনেক । এটি খাওয়ার সাথে সাথে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় । খেজুর অনেক উপকারি একটি ফল । আজকের আলোচনায় থাকবে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সর্ম্পকে ।

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

 

খেজুর গাছের বর্ণনা:

 

খেজুর গাছ একটি সব পুষ্পক উদ্ভিদ। খেজুর গাছ সাধারণত ৩০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতা হয়। একক ভাবে বেড়ে ওঠে বা একটি একক মূল সিস্টেম থাকে একাধিক ডালপালা সহ একটি গুচ্ছ গঠন করে খেজুর গাছ। খেজুর গাছ ১০০ বছরেরও বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

খেজুর গাছের পাতাগুলি চার থেকে ছয় মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতাগুলো কাটাযুক্ত এবং প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টি লিফলেট সহ পিনাট।খেজুর গাছ সহজেই বীজ থেকে জন্মায়। তবে চারাগুলো মাত্র পঞ্চাশ শতাংশ স্ত্রী, তাই ফল ধারণ করে।

 

খেজুরের বিজ্ঞান সম্মত নাম কি?

 

খেজুরের বিজ্ঞানসম্মত নাম হলো ফিনিক্স ড্যাক্টিলিফেরা।

 

খেজুরের ইংরেজি কি?

 

খেজুরের ইংরেজি হল Date Fruit।

এবার আমরা জেনে নেব খেজুর ফলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।

 

খেজুরের পুষ্টি উপাদান:

  •  ক্যালসিয়াম
  • পটাশিয়াম
  • প্রোটিন
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • ম্যাগানিজ
  • ফসফরাস
  • ভিটামিন বি ৬
  • ভিটামিন এ
  • ভিটামিন কে
  • ভিটামিন ই
  • জিংক
  • জল
  • কার্বোহাইড্রেট
  • আয়রন
  • ফ্যাট

 

এবার আমরা জেনে নেব প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের মধ্যে কি পরিমান পুষ্টিগুন আছে

  • ক্যালোরি      – ২৭৭ কিলোক্যালরি
  • কার্বোহাইড্রেট         – ৭৪.৯৭ গ্রাম
  • প্রোটিন         – ১.৮১ গ্রাম
  • মোট চর্বি      – ০.১৫ গ্রাম
  •  ফাইবার        – ৬.৭ গ্রাম
  • পটাসিয়াম – ৬৯৬ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম – ০.২৯৬ মিলিগ্রাম
  • ম্যাঙ্গানিজ – ৫৪ মিলিগ্রাম
  • আয়রন – ০.৯০ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি ৬ – ০.২৪৯ মিলিগ্রাম
  • ফোলেট – ১৯ মাইক্রগ্রাম
  • থায়ামিন – ০.০৫২ মিলিগ্রাম
  •  ক্যারোটিন – ৭৫ মাইক্রগ্রাম
  • নিয়াসিন – ১.২৭৪ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন সি – ০.৪ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন এ – ৬ মাইক্রগ্রাম
  • ভিটামিন কে – ২.৭ মাইক্রগ্রাম
  • ভিটামিন ই – ০.০৫ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম – ৩৯ মিলিগ্রাম
  • সোডিয়াম – ২ মিলিগ্রাম
  •  জিংক – ০.২৯ মিলিগ্রাম
  • জল – ২০.০৫ গ্রাম

কদবেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে  ক্লিক করুন                                                                                                                     

এখন আমরা জেনে নেব খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এর সর্ম্পকে বিশেষ কিছু তথ্য ।

খেজুর-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

 

খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ

 

 খেজুর হজম শক্তি উন্নতি করে:

 

খেজুর মানবদেহে হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। খেজুরে আছে যথেষ্ঠ পরিমান ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।

 

খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে:

 

খেজুর খাওয়ার ফলে  কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। কারণ খেজুরের মধ্যে আছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। যেসকল ব্যক্তি কোষ্ঠকাঠিন্যে সমস্যা তারা যদি নিয়মিত পরিমাণ মতো খেজুর খায় তাহলে কোষ্টকাঠিন্য দূর করার সম্ভব আছে।

 

খেজুর শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে:

 

খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরে শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকে। কারণ খেজুরের মধ্যে গ্লাইসেমিক সূচনা খুবই কম থাকে। যা রক্তের মধ্যে শর্করা মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

খেজুর মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ করে:

 

খেজুর মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। আলঝেইমারের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে খেজুর। খেজুরের মধ্যে আছে ভিটামিন বি এবং কোলাজের যেটা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

খেজুর হাড় মজবুত করে:

 

খেজুর মানব শরীরে হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। কারণ খেজুরের মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। যা হাড়ের সমস্যা দূর করতে এবং হাড় মজবুত আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

খেজুর ত্বকের জন্য উপকারী:

 

খেজুর ত্বকের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। কারণ খেজুরের মধ্যে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি আছে। যা ত্বকে করে সুস্থ ও সুন্দর এবং নরম করে তোলে।

খেজুর হ্যাংওভার নিরাময় করে:

 

খেজুর হ্যাংওভার হতে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। খেজুর খালি পেটে খেতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে সকালে খালি পেটে প্রথমেই খেজুর খেলে হ্যাংওভার থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

খেজুর চুলের জন্য খুবই উপকারী:

 

খেজুর চুলের জন্য খুবই উপকারী এক ফল। কারণ খেজুরের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন চুল মজবুত করতে সহায়তা করে।

হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে খেজুর:

 

খেজুর আমাদের শরীরের হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কারণ খেজুর আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফলে আমাদের হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য হয়। তাই খেজুর হার্টের জন্য উপকারী উপাদান।

খেজুর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে:

 

নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে মানবদেহে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব । তাই যে সকল ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ তাদের নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।

খেজুর চুলের জন্য খুবই উপকারী:

 

খেজুর চুলের জন্য খুবই উপকারী। কারণ খেজুরের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন চুলের গোড়া  মজবুত করতে সাহায্য করে।

খেজুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে:

 

খেজুর আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ খেজুরের মধ্যে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে ।

খেজুর বাতের সমস্যার উপশম করে:

 

খেজুর বাতের সমস্যার উপশম করতে সাহায্য করে। খেজুর খাওয়ার ফলে বাতের ব্যথা দূর হয়ে যায়। খেজুরের তেল ব্যথা স্থানে লাগালে অথবা গরম দুধের সঙ্গে খেতে পারলে উপকার পাওয়া যায়।

শরীরের ফোলা কমাতে সাহায্য করে খেজুর:

 

অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে ফোলা ভাব দেখা দেয়। যার জন্য অনেক রকমের ওষুধ খাওয়া হয়। কিন্তু খেজুরের সাহায্যে ব্যথা এবং ফোলা উভয় থেকেই মুক্তির পাওয়া যেতে পারে।

খেজুরের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের শরীরে ব্যথা এবং ফোলার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। তবে এটি খাওয়ার আগে ফুলে যাওয়ার সঠিক কারণ সম্পর্কে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।

 

খেজুর খাওয়ার অপকারিতা:

 

  • অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
  •  অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর খাওয়ার ফলে বদহজম হতে পারে, পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে।
  •   অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর খাওয়ার ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ খেজুরের মধ্যে আছে বিপুল পরিমাণে পটাশিয়াম।
  • যেহেতু খেজুর মিষ্টি জাতীয় ফল। তাই ডায়বেটিক রোগীর খেজুর পরিমিত পরিমান খাওয়া উচিত।

 

এই আর্টিকেলটিতে জেনে নিলাম খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে এবং বোধগম্য হয়েছে । আমাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন তাদের, ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন।

Category:

Leave a Comment